ঢাকা , সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​পাহাড়ে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে

টেকনাফে এক বছরে অপহরণের শিকার দেড় শতাধিক মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৪-০১-২০২৫ ০৫:৩৮:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০১-২০২৫ ০৫:৩৮:৪৪ অপরাহ্ন
টেকনাফে এক বছরে অপহরণের শিকার দেড় শতাধিক মানুষ
কক্সবাজারের টেকনাফে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অপহরণ বাণিজ্য। চরম আতঙ্কে রয়েছেন কৃষক, শ্রমিক সিএনজি অটোরিকশার চালকসহ বন বিভাগের সদস্যরাও। ডাকাতদল টার্গেট করে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অস্ত্রের মুখে লোকজনকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এতে গেলো এক বছরে দেড় শতাধিক ব্যক্তি পাহাড়ি সশস্ত্র ডাকাতদলের হাতে অপহরণের শিকার হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেলো বছরে টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কৃষক, শ্রমিক, কাঠুরিয়া, বনকর্মী, সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম চালক, শিক্ষার্থী, পথচারী, দোকানদার ও মাছ ব্যবসায়ীসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তি অপহরণের কবলে পড়ে। এদের মধ্যে অনেকে মোটা অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে আবার অনেক ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে বাড়িতে ফিরে আসেন।

অপহরণের পর মুক্তিপণ দিতে না পেরে খুনের শিকার হয়েছেন তিন বন্ধু। এমন ঘটনায় চরম আতঙ্কে আছে মানুষ। পাহাড়ি ডাকাতদল নির্মূল করতে পাহাড়ে যৌথবাহিনী ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার দাবি উঠেছে।

জাদিমুড়ার বনকর্মী জুহুর আলম বলেন, বিগত ৫ বছর বন বিভাগের কাজ করছি। আগের তুলনায় ইদানীং পাহাড়ে অপহরণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। তিনদিন আগে আমার ছেলেসহ ১৯ জন শ্রমিককে সশস্ত্র ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় তারা একদিন পর বাড়ি ফিরতে পেরেছে। পাহাড়ে কাজে গেলে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।

বাহারছড়ার ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও ক্ষেত-খামারসহ কাঠুরিয়া ও পানের বরজে কাজ করে। গরু চরাতে পাহাড়ের কিনারায় যায়। এই মানুষগুলো এখন অপহরণ আতঙ্কে ঠিকমতো তাদের নিত্যদিনের কাজও করতে পারছে না। এমনকি গত ৩০ ডিসেম্বর বাহারছড়ার বড় ডেইল থেকে জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে পাহাড়ি সশস্ত্র ডাকাতদল তুলে নিয়ে যায়। এর আগে তার ভাই মনিরুল উল্লাহকেও পুলিশের পোশাক পরে বাড়ি থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ডাকাতদল। ডাকাতদলের বিরুদ্ধে এলাকায় প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস করে না। যদি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাহলে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয় এবং রাতে ধরে নিয়ে যায়।

টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাসান সিদ্দিকী বলেন, অপহরণ বাণিজ্য বন্ধ করতে হলে পাহাড়সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান দরকার। অপহরণকারীদের আটক করে তাদের সঙ্গে কারা জড়িত এদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, অপহরণের ঘটনায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও স্থানীয় একাধিক ডাকাতকে আমরা আটক করেছি। এগুলো বন্ধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, অপহরণের ঘটনাগুলো কোন কোন পয়েন্টে হয় সেটি নির্ধারণ করে সেখানে নজরদারি বৃদ্ধি করাসহ কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সে বিষয়ে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করবো।

বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে 





প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ